ময়মনসিংহে বস্তাবন্দি নারীর মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জেরে ওই নারীকে তার স্বামী হত্যা করে পর ভাড়াটে বাসায় ফেলে যান। পরে বাড়ির মালিক মরদেহ গুম করার জন্য মরদেহ বস্তায় ভরে ফেলে গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহে রেখে যান। এ ঘটনায় নিহত নারীর স্বামীসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।নিহত নারীর নাম তাছলিমা আক্তার (৩২)। তিনি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ভাসাটি গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে।গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বাসিন্দা ও নিহত নারীর স্বামী
মেহেদী হাসান (২২) এবং গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকার বাড়িওয়ালা স্বপন ব্যাপারী (৩৮)।সোমবার (১৭ অক্টোবর) কোতোয়ালি মডেল থানা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুল ইসলাম ফকির।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সকালে আকুয়া-রহমতপুর বাইপাস সড়কের বাদেকল্পা এলাকার সড়কের পাশে ঝোপ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় নারীর বস্তাবন্দি বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় ওই নারীর বাবা আব্দুর রশিদ বাদী
হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ জনায়, নিহত তাছলিমার সঙ্গে ফুলপুরের মেহেদীর বিয়ে হয়। এটা ছিল তাছলিমার তৃতীয় বিয়ে। এই বিয়ের পর থেকে তাছলিমা তার স্বামী মেহেদীকে নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করছিলেন। ১১ অক্টোবর তারা চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় জনৈক স্বপনের বাসায় ভাড়া ওঠেন। ওই বাসায় বুধবার (১২ অক্টোবর) রাতে স্ত্রী তাছলিমাকে হত্যা করে মরদেহ ভাড়া বাসায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান মেহেদী হাসান।পরদিন সকালে বাড়ির মালিক স্বপন ব্যাপারী নতুন ভাড়াটিয়া তাছলিমা ও
তার স্বামী মেহেদীর জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে ওই বাসায় যান। এ সময় দরজার কড়া নেড়েও কোনো সাড়াশব্দ পাননি। পরে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে তাছলিমার বিবস্ত্র মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এতে তিনি ভয় পেয়ে যান এবং মরদেহ গুম করার পরিকল্পনা করেন।বৃহস্পতিবার দিনভর ঘর বন্ধ রেখে ওইদিন রাতে মরদেহ বস্তায় ভরে নিজ প্রাইভেটকারে করে নিয়ে ময়মনসিংহের দিকে রওনা দেন স্বপন ব্যাপারী। পরে মরদেহ আকুয়া-রহমতপুর বাইপাসের বাদেকল্লা এলাকায় ফেলে রেখে চলে যান।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ ছিল। সেই কলহের জেরেই তাসলিমাকে হত্যা করেন তার স্বামী। এ ঘটনায় সোমবার ভোরের দিকে গাজীপুর ও আশপাশের এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারের পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি দুজনই স্বীকার করেন। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।